জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করলেন সেনাপ্রধান

সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেছেন, শান্তিরক্ষায় বাংলাদেশের অবদান আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জন করেছে এবং জাতিসংঘ মিশনে ধারাবাহিক অংশগ্রহণের মাধ্যমে বিশ্ব শান্তি বজায় রাখতে দৃঢ়ভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বৃহস্পতিবার (২৯ মে) আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস-২০২৫ উপলক্ষ্যে ঢাকায় বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। বিভিন্ন শান্তিরক্ষা মিশনে গিয়ে প্রাণ হারানো ১৬৮ জন বীর সৈনিক ও পুলিশ সদস্যদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে তিনি বলেন, ‘তাদের এই আত্মত্যাগ জাতি গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ রাখবে।’

সেনাপ্রধান বলেন, বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ আজ একটি স্বীকৃত এবং অত্যন্ত গ্রহণযোগ্য নাম। জাতিসংঘের আহŸানের সাড়া দিয়ে বাংলাদেশ ১৯৮৮ সাল থেকেই বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে আসছে। বর্তমানে শান্তি রক্ষা কাজে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৪ হাজার ৮৮০ জন, নৌবাহিনীর ৩৪৩ জন, বিমান বাহিনীর ৩৯৬ জন এবং পুলিশ বাহিনীর ১৯৯ জনসহ সর্বমোট ৫ হাজার ১৮০ জন শান্তিরক্ষী বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নয়টি শান্তিরক্ষা মিশনে নিয়োজিত আছেন।

তিনি বলেন, পুরুষ সদস্যের পাশাপাশি আমাদের নারী শান্তিরক্ষীরাও অগ্রণী ভ‚মিকা পালন করে চলেছেন। অদ্যাবধি বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী ও পুলিশের সর্বমোট ৩ হাজার ৬৪৫ জন নারী শান্তিরক্ষী সফলভাবে শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেছেন। বর্তমানে ৪৪৪ জন নারী সদস্য শান্তিরক্ষার কাজে সক্রিয়ভাবে নিয়োজিত রয়েছেন।’ সেনাপ্রধান বলেন, ‘আমাদের শান্তিরক্ষীরা নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে উন্নত প্রশিক্ষণ, নৈতিক মূল্যবোধ, দক্ষতা এবং নিরপেক্ষতার প্রমাণ রেখে সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সর্বদা প্রস্তুত।’

সা¤প্রতিক অর্জনের মধ্যে তিনি একটি বিষয় উল্লেখ করে বলেন, ‘বাংলাদেশি একটি হেলিকপ্টার কন্টিজেন্ট আর্ন রোলে কঙ্গো মিশনে মোতায়েন রয়েছে। এছাড়াও স¤প্রতি পেরুবিয়ান আর্মিকে নিজেদের প্রযুক্তিতে তৈরি বিস্ফোরক নিষ্ক্রিয়কারী যান অনুদান হিসেবে হস্তান্তরের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।’ তিনি বলেন, সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকে আমাদের অনুদান ও তত্তাবধানে একটি কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠিত হয়েছে যা স্থানীয় জনগণকে স্বাস্থ্য সেবা দিয়ে যাচ্ছে।

সেনাপ্রধান বলেন, ‘এই ক্লিনিকটি যেদিন উদ্বোধন হয়, সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকের মাননীয় রাষ্ট্রপতি উপস্থিত ছিলেন। সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকের জনগণ এবং মাননীয় রাষ্ট্রপতি আমাদের কাজে অত্যন্ত সন্তুষ্ট হয়েছেন।’ ক‚টনীতিক এবং বিদেশি বন্ধুদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমি আপনাদের আশ্বস্ত করতে চাই জাতিসংঘের শান্তি প্রতিষ্ঠার আহŸানে সাড়া দেওয়া অব্যাহত রাখবে বাংলাদেশ। আমাদের অঙ্গীকার মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ এবং আমাদের সাংবিধানিক নীতির উপর নিহিত। আমরা সবসময় বিশ্ব শান্তির পক্ষে থাকব।’

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *