বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে নিউ ইয়র্কে শুরু হয়েছে আন্তর্জাতিক বাংলা বইমেলা ২০২৫। ৩৪তম এ বইমেলা চলবে ২৬ মে পর্যন্ত। গতকাল শনিবার (২৪ মে) মেলার উদ্বোধন করেন জনপ্রিয় ঔপন্যাসিক ও কবি সাদাত হোসাইন। বইমেলার প্রথম দিনের আলোচনায় প্রবাসে বাংলা সাহিত্য চর্চা ও প্রজন্মান্তরে তার ধারাবাহিকতা ছড়িয়ে দেওয়ার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়।
বৃষ্টিস্নাত বিকেলে জ্যামাইকার সেন্টার ফর লার্নিং অ্যান্ড আর্টে জমজমাট হয় সাহিত্যপ্রেমীদের আড্ডা। একদিকে মঞ্চজুড়ে বাংলার লোকায়ত গান, নাচ, অন্যদিকে নতুন বইয়ের খোঁজে স্টলগুলোজুড়ে ছিল সাহিত্যপ্রেমীদের ভিড়। বেশ কয়েকটি সাংস্কৃতিক সংগঠনের পরিবেশনা শুধু সাহিত্য নয়, বাংলা সংস্কৃতির প্রতি অ্যামেরিকান বাংলাদেশিদের চিরায়ত টানের গল্পই যেন তুলে আনে। পরে বিশিষ্টজনদের সঙ্গে নিয়ে মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করেন তরুণ ঔপন্যাসিক সাদাত হোসাইন।অডিটোরিয়ামে মঙ্গল দ্বীপ জ্বালানোর পাশাপাশি ৩৪তম বইমেলার আসর উপলক্ষে মঞ্চে আমন্ত্রণ জানানো হয় দুই বাংলার ৩৪ জন বিশিষ্টজনকে।
প্রধান অতিথি ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের সময় অ্যামেরিকার অস্ত্রবাহী জাহাজে ব্লকেড তৈরি করা বাংলাদেশের বন্ধুখ্যাত ফিলিস টেইলর। বিশেষ অতিথি সাহিত্য সমালোচক, দার্শনিক, কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক গায়ত্রী চক্রবর্তী স্পিভাক এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন (অব.) সিতারা বেগম বীরপ্রতীক। সিতারার স্মৃতিচারণে উঠে আসে বইমেলা ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস।
আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. রেহমান সোবহান ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক ড. রওনক জাহান প্রবাসে বাংলা সাহিত্য চর্চার এমন আয়োজনকে সাধুবাদ জানান। আয়োজকরা বলছেন, মুক্তধারা ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ৩৪ বছর ধরে ধারাবাহিক এ আয়োজন এ দেশের বিভিন্ন প্রজন্মের বাংলাদেশিদের কাছে সাহিত্যের প্রতি টান অনুভবে ভূমিকা রাখছে।
মেলায় বাংলাদেশি ২৫টি প্রকাশনী কয়েক হাজার নতুন ও পুরাতন বই নিয়ে এসেছে। চার দিনব্যাপী বইমেলায় প্রতিদিনই থাকছে লেখক-পাঠকের মুখোমুখি হওয়া, নতুন বই নিয়ে আলোচনা, স্বরচিত কবিতা পাঠ, আবৃত্তি, বিতর্ক ও সেমিনার।